যমুনা কিনারে

সয়ন চরাবহি পাবে

সয়ন চরাবহি পাবে।
দুর কর সে সব সকল সভাবে।।
মুখ অবনত তেজ লাজে।
কত মহি লিখসি চরন মহিকে আসে।।
রামা রহ পিআ পাসে।
অভিনব সঙ্গম তেজহি তরাসে।।
পিয়া সয়ঁ পহিলকি মেলী।
হোউ কমলকে অলি কেলী।।
তরতম তঞে কর দূরে।
ছেল ইছহি ছোড়হ মোর চীর।।
বিদ্যাপতি কবি ভাসা।
অভিনব সঙ্গম তেজহ তরাসা।।

অন্তঃকথন:
সখী যেমন রাধারানীকে লজ্জার পাঠ দেন তেমনি সময় বিশেষে লজ্জা ত্যাগ করতেও উপদেশ দেন। আসলে যাতে রাধামাধবের মিলন সর্বাঙ্গসুন্দর হয় এই তাঁদের বাসনা।প্রথম মিলনের আগে রাধারানী যখন লাজে ভয় ত্রাসে বিচলিত তখন সখী তাঁকে বলছেন, লজ্জায় শয্যা ছেড়ে চলে যেতে চাইছো, এ আবার কেমনধারা কাজ? এখন ওসব স্বভাব দূর করো। মুখ নীচু করে আছো তাতে ক্ষতি নেই কিন্তু লজ্জা পরিত্যাগ করো! মাটিতে পা রেখে পায়ের আঙুল দিয়ে কত কি লিখছো! মনে তোমার লজ্জা দ্বিধা ভয় বুঝতেই পারছি। তাই বলি, রামা, অপূর্ব এই মিলনে ভয় ত্যাগ করে প্রিয়ের পাশে অবস্থান করো! প্রিয়তমের সঙ্গে তোমার এই প্রথম মিলন পদ্মের সঙ্গে ভ্রমরের কেলির মত সহজ সুন্দর হোক! রাধারানী তবুও নির্ভয় হতে পারছেন না, সখীর কাপড় ধরে আছেন দেখে সখী বলছেন, তুমি দ্বিধাভাব দূর করো, রসিক তোমায় কামনা করে তার কামনা পূর্ণ করো আমার বস্ত্র ছাড়ো! বিদ্যাপতি সখীর কথার ধুয়ো তুলে বলছেন, রাধারানী এ অভিনব মিলন, ত্রাস ত্যাগ করো!

পদকর্তা:বিদ্যাপতি
রাগ:অজ্ঞাত
তাল:অজ্ঞাত
সংকলন:দেবহূতি সরকার

সন্ধিনী