যমুনা কিনারে

সুজন বচন হে জতনে পরিপালএ

সুজন বচন হে জতনে পরিপালএ
কুলমতি রাখএ গারি।
সে পহু বরিসে বিদেস গমাওত
জঞো কী হোইতি বর নারি।।
কহ্নাই পুনু পুনু সুভধনি সমাদ পঠাওল
অবধি সমাপলি আএ।।
সাহর মুকুলিত করএ কোলাহল পিক
ভমর করএ মধুপান।
মত জামিনী হে কইসে কএ গমাউতি
তোহ বিনু তেজতি পরান।।
কুচ রুচি দুরে গেল দেহ অতি খিন ভেল
নয়নে গরএ জলধার।
বিরহ পয়োধি কাম নাব তহি
আস ধরএ কড়হার।।

অন্তঃকথন:
মাধব ফিরে আসার আশ্বাস দিয়ে বিদেশে গেছিলেন, রাধারানী তাঁর পথ চেয়ে বসে আছেন। কিন্তু প্রত্যাশিত দিন অতিক্রম করে যায় তবু মাধব ফেরেন না, এদিকে বৃন্দাবনে বসন্ত সমাগত। এমন মধুঋতু বিরহে কেমনে কাটাবেন রাধারানী? বিদ্যাপতি বিরহের গান গাইছেন। মাধবকে উদ্দেশ্য করে বলছেন, সুজন নিজের কথা যতনে পরিপালন করে, কলাবতীকে অপযশ থেকে সর্বদা রক্ষা করে। প্রভু যদি সমস্ত বর্ষ বিদেশে যাপন করে তা হলে শ্রেষ্ঠ নারীর কি হবে? কানাই বারবার শুভ সংবাদ পাঠিয়েছিলেন, কিন্তু যে দিন ফিরে আসবেন বলেছিলেন সে দিনও আজ শেষ হয়ে গেল। সহকার মুকুলিত, পিককূল কোলাহল করছে, ভ্রমর মধুপান করছে। রাধারানী মধুযামিনী কেমন করে যাপন করিবেন? তোমার বিহনে প্রাণত্যাগ করবেন। শ্রীমতীর কুচের শোভা দূরে গেছে, দেহ অতি ক্ষীণ হয়ে গেছে, নয়নে অবিরল জলধারা বইছে। বিরহ পয়োধি তায় কাম নৌকা, তবুও কবিকণ্ঠহার আশা দিচ্ছেন, কূল মিলবে!

পদকর্তা:বিদ্যাপতি
রাগ:অজ্ঞাত
তাল:অজ্ঞাত
সংকলন:দেবহূতি সরকার

সন্ধিনী

ব্রজবুলি368