সদা বল তত্ত্ব তত্ত্ব কত তত্ত্ব শুন।
চব্বিশ তত্ত্বে হয় দেহের গঠন।।
পঞ্চ ভূত ক্ষেত্র তেজ মরুৎ ব্যোম আপ।
ষড়্‌ রিপু কাম ক্রোধ মদ মাৎসর্য্য দম্ভ।।
দশ ইন্দ্র ক্ষত তারা হয় ত পৃথক্‌।
জ্ঞানেন্দ্রিয় কর্ম্মেন্দ্রিয় বিবিধ নামাত্মক।।
জ্ঞানেন্দ্রিয় জিহ্বা কর্ণ নাসা ত্বক্‌ চক্ষু।
কর্ম্মেন্দ্রিয় হস্ত পদ গুহ্য লিঙ্গ বপু।।
মহ্যভূত অহঙ্কার আর হয় জ্ঞান।
এই ত হয় চব্বিশ তত্ত্ব নিরূপণ।।
কিবা কারিকরের আজা কারিকুরি।
তার মধ্যে ছয় পদ্ম রাখিয়াছে পূরি।।
সহস্রারে হয় পদ্ম সহস্রক দল।
তার তলে মণিপূর পরমশিবের স্থল।।
নাসামূলে দ্বিদল পদ্ম খঞ্জনাক্ষি।
কণ্ঠে গাঁথি ষোড়শ দল পদ্ম দিল রাখি।।
হৃৎপদ্ম নির্ম্মিত আছে শত দলে।
কুলকুণ্ডলিনী দশদল হয় নাভিমূলে।।
নাভির নিম্নভাগে প্রেম-সরোবর।
অষ্টদল পদ্ম হয় তাহার ভিতর।।
তস্য পরে নাড়ী ধরে সার্দ্ধ তিন কোটি।
স্থুল সূক্ষ্ম বত্রিশ তারা কিবা পরিবাটি।।
লিঙ্গমূলে ষড়্‌দলাম্বুজ নিয়োজিত।
গুহ্যমূলে চতুর্দ্দল পদ্ম বিরাজিত।।
এই অষ্ট পদ্ম দেহমধ্যেতে আছয়।
মতান্তরে হৃৎপদ্ম দ্বাদশদল কয়।।
সহস্রদল অষ্টদল দেহমধ্যে নয়।
এই দুই পদ্ম নিত্য-বস্তুর আধার হয়।।
ষট্‌চক্রের মূল মৃণাল হয় মেরুদণ্ড।
শিরসি পর্য্যন্ত সে ভেদ করি অণ্ড।।
দণ্ড দুই পার্শ্বেতে ঈড়া পিঙ্গলা রহে।
মধ্যে স্থিত সুষুম্না সদা প্রবল বহে।।
মূলচক্র হয় হংস যোগের আধার।
অষ্টদল চক্রে লীলার সঞ্চার।।
দ্বিদল চক্রেতে হয় অমৃত নির্ভর।
আর পঞ্চ চক্রে পঞ্চ বায়ুর সঞ্চার।।
প্রাণ অপান ব্যান উদান সমান।
কণ্ঠাস্বুজাবধি চতুর্দ্দলে অবস্থান।।
কণ্ঠপরে উদান হৃদিতে বহে প্রাণ।
নাড়ীর ভিতরে সমান করে সমাধান।।
চতুর্দ্দলে অপান সর্ব্বভূতেতে ব্যান।
মুখ্য অনুলোম বিলোম সকল প্রধান।।
অজপা নামেতে তারা কুম্ভক রেচক।
অনুলোম ঊর্দ্ধরেতা বিলোম প্রবর্ত্তক।।
প্রবর্ত্ত সাধক হৃদ্‌নাভি-পদ্মের আশ্রয়।
সিদ্ধার্থ সহস্রারে আছয়ে নিশ্চয়।।
রতি স্থির প্রেম-সরোবর অষ্টদলে।
সাধনের মূল এই চণ্ডীদাস বলে।।