রতন-মন্দিরে রসালস-ভরে
শয়নে আছয়ে রাই।
মুখরা-বচন শুনিয়া তখন
বিশাখা জাগায়ে যাই।।
অতি ত্বরা ডাকি কহে উঠ সখি
ঘুচাহ আলস-কাজ।
তার বাণী শুনি জাগিলা সে ধনী
গলিত বসন সাজ।।
রাজহংসী যেন নদীতে শয়ন
তরঙ্গে চালয়ে ঘন।
রতন-পালঙ্কে শুতিয়াছে রঙ্গে
হিলোলিত দুনয়ন।।
হেনকালে রতি মঞ্জরী সুমতি
জানে অবসর-কাল।
বৃন্দাবনেশ্বরী পদযুগ ধরি
সেবন করয়ে ভাল।।
কত পরকার করি বারেবার
জাগাইল সব সখী।
উঠি ত্বরা করি বসিলা সুন্দরী
খিতি-তলে পদ রাখি।।
হেনই সময়ে মুখরা দেখয়ে
উঢ়নি পিয়ল বাস।
বিশাখাকে কহে কিবা দেখি ওহে
দেখিয়া লাগয়ে ত্রাস।।
হাহা পরমাদ বড় পরমাদ
একি পরমাদ হায়।
দ্রব হেমকাঁতি বসনের ভাতি
তোমার সখীর গায়।।
সন্ধ্যাকালে কালি উরে বনমালী
দেখিয়াছি এই বাস।
সতীকুল হৈয়া সেরূপে ভুলিয়া
ধরম করিলা নাশ।।
মুখরা-বচন শুনিয়া তখন
বিশাখা চকিত হৈয়া।
দেখে পীতবাস আছে রাই পাশ
একি কহে ধীর হৈয়া।।
মুখরাকে তবে কহে শুন এবে
স্বভাব-আন্ধল তুয়া।
একে এক দেখ আনে আন লখ’
নাহি কহ বিচারিয়া।।
রাইক কিরণ দ্রব-হেম সম
পিন্ধন নীলিম বাস।
তাহাতে বিহানে রবির কিরণে
মনে হয় পীত ভাস।।
গবাক্ষ-জালেতে দেখ পরতেকে
রবির কিরণ লাগি।
ইহার কারণে তোমার মরমে
শঙ্কা উঠে কেনে জাগি।।
শুদ্ধ সতী জনে হেন কহ কেনে
অবুধ জানার মতি।
এ যদুনন্দন কহয়ে বিভ্রম
বড় পরমাদ অতি।।