যমুনা কিনারে

ভাবিনি ভল ভএ বিমুখ বিধাতা

ভাবিনি ভল ভএ বিমুখ বিধাতা।
জইহ পেম সুরতরু সুখদায়ক
সইহ ভেল দুখদাতা।।
তোর সুমরি গুন মোর হৃদয় সূন
নোর নয়ন রহু ঝাঁপি।
গরজ গগন ভরি জলধর হরি হরি
অব হমর হিয় কাঁপি।।
করিঅ জতন জত বিফল হোয় তত
ন পাইঅ তোহর সমাজে।
বিরহ দহন দহ তইও জীব রহ
সব তহ ই বড়ি লাজে।।
নিবিড় নেহ রস বস ভয় মানস
পাব পরাভব লাখে।
পুরুস পরুষমতি কে জুবতী ন কহতি
কবি বিদ্যাপতি ভাখে।।

অন্তঃকথন:
বিরহে নিমজ্জিত রাধারানী আপন দুর্ভাগ্যের কথা স্মরণ করে বলছেন, ভাবিনি, এই বুঝি ভালো হল, বিধাতা বিমুখ হয়ে রইলেন! যে প্রেম কল্পতরুর ন্যায় সকল মনোকামনা পূর্ণ করে কেবল আনন্দই দেয়, সেই প্রেম আমার কপালে দু:খ নিয়ে এলো। হা মাধব, তোমার কথা, তোমার গুণের কথা স্মরণ করলে আমার হৃদয় যেন শূন্য মনে হয়, ফাঁকা লাগে, আর দুচোখ ভরে জল আসে। হরি হরি! দেখো গগনে মেঘ গর্জন করছে আর আমার হৃদয় কেঁপে কেঁপে উঠছে। এমন মেঘের দিনে তোমার সঙ্গে আমার মিলন হতো! আর এখন যত চেষ্টা, যত যত্নই করি না কেন, মিলন হয় না। বিরহের আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যাচ্ছি তবু যে বেঁচে আছি এখনো, এর চেয়ে বড় লজ্জা আর নেই। নিবিড় প্রেমরসে বশীভূত আমার মন তোমার কথা ভাবলেই অশান্ত হয়ে উঠছে। লক্ষবার আমার মন হার মানছে প্রেমের কাছে। বিদ্যাপতি বলছেন, পুরুষে হৃদয় যে কঠিন কোন যুবতীই বা তা না বলে?

পদকর্তা:বিদ্যাপতি
রাগ:অজ্ঞাত
তাল:অজ্ঞাত
সংকলন:দেবহূতি সরকার

সন্ধিনী