যমুনা কিনারে

নূপুর রসনা পরিহার দেহ

নূপুর রসনা পরিহার দেহ।
পীত বসন হে জুবতি পিঁধি লেহ।।
সিথিল বিলম্বে হোএত হাস।
নহি গএ হোএত কাহ্নক পাস।।
গমন করহ সখি বল্লভ গেহ।
অভিমত হোএত ইথি ন সন্দেহ।।
কুঙ্‌কুম পঙ্ক পসাহহ দেহ।
নয়নজুগল তুঅ কাজর রেহ।।
অবহি উগত তম পিবিকহু চন্দ।
জানি পিসুন জন বোলব মন্দ।।
ভনই বিদ্যাপতি সুন বরনারি।
অভিনব নাগর রূপে মুরারি।।

অন্তঃকথন:
রাধারানী অভিসারে যাবেন! কৃষ্ণ অভিসারে! সখীগণ তাঁকে বিবিধ উপদেশ দিচ্ছেন, যাতে অভিসারে কোনো বিঘ্ন না ঘটে, যাতে শ্রীমতীর মনোবাসনা পূর্ণ হয়! সখীরা শ্রীমতীকে বলছেন, তোমার পায়ের শিঞ্জিনি নূপুর আর কটির ঐ রসনা ত্যাগ করো এখনি। নইলে অভিসারে যাওয়ার সময় আওয়াজ হবে, লোকে জানতে পেরে যাবে যে তোমার এই গোপন গমন! যুবতি তুমি পীত বসন পরিধান করে নাও! কৃষ্ণের অঙ্গবাস এই পীত বসন, তুমি তাই অঙ্গে ধারণ করলে মাধবকেই অঙ্গে ধারণ করা হবে এমন কথাই হয়ত বলতে চেয়েছেন সখীরা! রাধারানী অভিসারে যাবেন! কৃষ্ণ অভিসারে! সখীগণ তাঁকে বিবিধ উপদেশ দিচ্ছেন, যাতে অভিসারে কোনো বিঘ্ন না ঘটে, যাতে শ্রীমতীর মনোবাসনা পূর্ণ হয়! সখীরা শ্রীমতীকে বলছেন, তোমার পায়ের শিঞ্জিনী নূপুর আর কটির ঐ রসনা ত্যাগ করো এখনি। নইলে অভিসারে যাওয়ার সময় আওয়াজ হবে, লোকে জানতে পেরে যাবে যে তোমার এই গোপন গমন! যুবতি তুমি পীত বসন পরিধান করে নাও! কৃষ্ণের অঙ্গবাস এই পীত বসন, তুমি তাই অঙ্গে ধারণ করলে মাধবকেই অঙ্গে ধারণ করা হবে এমন কথাই হয়ত বলতে চেয়েছেন সখীরা! তাঁরা শ্রীমতী দ্রুত প্রস্তুত হয়ে নিতে বলছেন কারণ শৈথিল্যজনিত কারণে বিলম্ব হলে তোমায় কেবল উপহাসই সহ্য করতে হবে, কানাইয়ের কাছে যাওয়া আর হয়ে উঠবে না! সখি, বল্লভগৃহে গমন কর শীঘ্র, তোমার মনোবাসনা পূর্ণ হবে তাতে সন্দেহ নেই! শ্যামের কাছে চলেছ তুমি, উপযুক্ত সাজে সেজে যাও অবশ্যই, কুঙ্কুম-চন্দনে দেহ সাজাও, ও দুটি দীঘল আঁখিতে কাজলের ছোঁয়া দাও! তবে প্রসাধন দ্রুত সমাপন কর সখী, কারণ এখনই অন্ধকার পান করে চন্দ্র উদিত হবেন, সেই জ্যোৎস্নায় তোমায় অভিসারে যেতে দেখলে নিন্দুকেরা মন্দ কথা বলবে! অতএব ত্বরা কর সখী ত্বরা কর, সময় পার হয়ে যায়! বিদ্যাপতি রাধিকাকে বলছেন রমণীশ্রেষ্ঠা শোন, অভিনব নাগর রূপে মুরারি শুধু তোমারই জন্য অপেক্ষা করছেন! অর্থাৎ তুমি আর তাঁকে প্রতীক্ষায় রেখো না, শীঘ্র গমন কর!

পদকর্তা:বিদ্যাপতি
রাগ:অজ্ঞাত
তাল:অজ্ঞাত
সংকলন:দেবহূতি সরকার

সন্ধিনী