দু-কান পাতিয়া ছিল এতক্ষণ
বঁধু-পথপানে চাই।
পরভাত নিশি দেখিয়া অমনি
চমকি উঠিল রাই।।
পাতায় পাতায় পড়িছে শিশির
সখীরে কহিছে ধনী।–
“বাহির হইয়া দেখলো সজনি,
বঁধুর শবদ শুনি।।”
পুনঃ কহে রাই– “না আসিল বঁধুর
মরমে রহল ব্যথা।
কি বুদ্ধি করিব পাষাণে বাড়িয়া
ভাঙ্গিব আপন মাথা।।
ফুলের এ ডালা ফুলের এ মালা
শেজ বিছাইনু ফুলে।
সব হৈল বাসি আর কেন সই
ভাসা গে যমুনা-জলে।।
কুমকুম কস্তূরী চুবক চন্দন
লাগিছে গরল হেন।
তাম্বুল বিরস ফুলহার ফণী
দংশিছে হৃদয়ে যেন।।
সকল লইয়া যমুনার ডার
আর ত না যায় দেখা।
ললাটের সিন্দূর মুছি কর দূর
নয়ানের কাজর-রেখা।।
আর না রাখিব এ ছার পরাণ
না যাব লোকের মাঝে।”
স্থির হও রাই চলু চণ্ডীদাস
আনিতে নিঠুর রাজে।।