যমুনা কিনারে

দুরজন দুরনএ পরিনতি মন্দ

দুরজন দুরনএ পরিনতি মন্দ।।
তা লাগি অবস করিঅ নহি দন্দ।।
হঠে জঞো করবহ সিনেহক ওর।
ফূটল ফটিক বলঅ কে জোর।।
সাজনি অপনেঁ মন অবধার।
নখ ছেদন কে লাব কুঠার।।
জতনে রতন পএ রাখব গোএ।
তেঁ পরি জেঁ পরবস নহি হোএ।।
পরগট করব ন সুপহুক দোস।
রাখব অনুনঅ অপন ভরোস।।
ভনই বিদ্যাপতি পরিহর ধন্ধ।
অনুখন নহি রহ সুপহু অনুবন্ধ।।

অন্তঃকথন:
মাধবের ব্যবহারে রাই বড় অভিমান করেছেন। মানিনী রাইবিনোদিনীর মান ভাঙাতে দূতী তাঁকে বুঝিয়ে বলছেন, দেখো দুর্জনের দুর্নীতির পরিণাম মন্দই হয়, কিন্তু সেজন্য তুমি বিবাদ করো কেন? বলপূর্বক যদি প্রেমের শেষ করো, তাহলে স্ফটিকের সেই ভগ্ন বলয় জোড়া দেবে কে? স্নেহ তো কাঁচের মতই, ভাঙলে আর জোড়া লাগে না! সজনি, নিজের মনে ভেবে দেখো নখ কাটার জন্য কেউ কি কুঠার আনে? তুমি লঘু পাপে গুরুদণ্ড দিচ্ছ, এ–কথাই তো বলতে চাইছেন সখী! তারপর উপদেশ দিয়ে বলছেন, শোনো আপন রত্ন যত্নে লুকিয়ে রাখবে যাতে পরের হাতে না পড়ে! সুনাগরের দোষ প্রকাশ করবে না, বরং অনুনয় বিনয় করে আশা জিইয়ে রাখবে। বিদ্যাপতিও শ্রীমতীকে উপদেশ দিয়ে বলছেন, সংশয় ত্যাগ করো রাধারানী, সুপ্রভু যে সব সময়েই অনুকূল থাকেন তা নয়! অর্থাৎ তাঁর আচরণের জন্য তাঁর ওপর রাগ করে থেকো না।

পদকর্তা:বিদ্যাপতি
রাগ:অজ্ঞাত
তাল:অজ্ঞাত
সংকলন:দেবহূতি সরকার

সন্ধিনী