যমুনা কিনারে

তুঅ বিসবাসে কুসুমে ভরু সেজ

তুঅ বিসবাসে কুসুমে ভরু সেজ।
বসন্তক রজনী চাঁদক তেজ।।
মন উতকঠিত কতএ ন ধাব।
দহ দিস সূন নয়ন ভনি আব।।
হরি হরি হরি তুঅ দরসন লাগি।
নাগরি রয়নি গমাউলি জাগি।।
সুপুরুস ভএ নহি করিঅএ রোস।
বড় ভএ কপটী ই বড় দোস।।
ভনই বিদ্যাপতি গরুবি বোল।
জে কুল রাখএ সেহে অমোল।।

অন্তঃকথন:
মাধবের মন রাধারানির ওপর বিরূপ। দূতী রাধারানীর হয়ে মাধবের মন ফেরাবার চেষ্টা করছেন। দূতী মাধবকে রাধারানীর প্রেমের কথা জানিয়ে বলছেন, তোমার আশায় সে কুসুমে সজ্জা সাজালো। বসন্তের রাত, চন্দ্রকিরণে উজ্জ্বল। এ সময় উৎকণ্ঠিত মন কোথায় কোথায় না ছুটে চলে, রাধিকার শূন্য নয়ন তোমার প্রতীক্ষায় দশদিক ঘুরে মরে। হায় হায়, তোমার দর্শনের জন্য নাগরী সমস্ত রাত জেগে কাটালো। শোনো মাধব, সুপুরুষ হয়ে রাগ করতে নেই। যে মহৎ সে কপট হলে বড় দোষ হয়! দূতী বলতে চাইছেন, রাধিকার যদি কোন ভুল হয়েও থাকে তুমি মহৎ হয়ে তাকে ক্ষমা করে দাও, সে তোমার প্রতীক্ষায় অধীর, তাকে দর্শন দাও। দূতীর অনুনয় শুনে বিদ্যাপতি রাধিকার সমব্যাথী হয়ে মূল্যবান কথা বলছেন, যে কুল রক্ষা করে সে অমূল্য! অর্থাৎ, রাধারানী যদি কুল রাখতে গিয়ে তোমায় কোনভাবে অবহেলা করেও থাকেন তবু রাগ কোরো না, কারণ যে নিজের কুল যে রাখে সে অমূল্য। আবার এও হতে পারে বিদ্যাপতি বলতে চাইছেন, মাধব তুমি তোমার উচ্চকুলের মান রেখে মহতের মতো আচরণ করো, যে তোমার অপেক্ষায় আছে তাকে আর যাতনা দিও না!

পদকর্তা:বিদ্যাপতি
রাগ:অজ্ঞাত
তাল:অজ্ঞাত
সংকলন:দেবহূতি সরকার

সন্ধিনী