তাহে অপরূপ কৃষ্ণ অবতার
হইল সুবল সখা।
অতি অনুপম যেন নবঘন
জলদ সমান দেখা।।
যেমত অঞ্জন ললিত রঞ্জন
কিবা অতসীর ফুল।
যেন কুবলয় দল সরোরূহ
যেমত কানড় ফুল।।
কোনরূপ হেন যেন নিরুপম
দেখিয়াছে বহুরূপ।
বিবিধ বন্ধান করিয়া সন্ধান
গড়ল রসের কূপ।।
চরণ যেমত যাবক নিন্দিয়া
হিঙ্গুল দলিয়া যৈছে।
তাহাতে অধিক বিম্বফল সম
দেখিতে না পারে কৈছে।।
তাহাতে রঞ্জিত দশনখ চাঁদ
চরণে শোভিত ভাল।
তাহার শোবাতে দশদিক শোভা
সকল করেছে আলো।।
কনক কিঙ্কিণী কলহংস জিনি
পীতের বসন সাজে।
এ চূয়া চন্দন অঙ্গে সুলেপন
মৃগমদ আদি রাজে।।
বনমালা গলে কিবা শোভা করে
শোভিত কৌস্তুভ তায়।
যমুনাতে যেন চাঁদ ঝলমল
দেখি যে তেমতি প্রায়।
শিখী মনোহর অধিক সুন্দর
শিরে পুচ্ছ শোভে তায়।
শ্রবণে মকর কুণ্ডল দোলয়
যেমতি রবির প্রায়।।
অধর বান্ধুলী সুন্দর উপমা
দশন দাড়িম বীজে।
ভালে সে শোভিত চন্দনের চাঁদ
তাহে গোরচনা সাজে।।
নয়ন কমল অতি নিরমল
তাহে কাজরের রেখা।
যমুনা কিনারে মেঘের ধারাটি
অধিক দিয়াছে দেখা।।
নবগ্রহ বেড়ি তাহার উপরে
মুকুতা দুসারি সাজে।
প্রবাল মাণিক মণির মালায়ে
বেড়িয়া তাহার মাঝে।।
বিচিত্র চামর কেশের আঁটনি
বাঁধিয়া বিনোদ চূড়া।
নানা সে কুসুম অতি সে সুষম
তাহা মালা দিয়া বেড়া।।
তা পরে ময়ূর শিখণ্ড আরোপি
করেতে মোহন বাঁশী।
ত্রিভঙ্গ ভঙ্গিমা কটাক্ষ চাহনি
অমিয়া মধুর হাসি।।
দেখিয়া সেরূপ মদন মুরছে
কুলের কামিনী যত।
মুনির মানস জপতপ ছাড়ি
ওরূপ দেখিয়া কত।।
বৃকভানুপুর নাগর-নাগরী
পড়িছে মূরছা খাই।
ঢলিয়া পড়ল বৃকভানুরাজা
দ্বিজ চণ্ডীদাসে গাই।।