যমুনা কিনারে

জাহি দেস পিক মধুকর নহি গুজর

জাহি দেস পিক মধুকর নহি গুজর
কুসুমিত নহি কাননে ।
ছও রিতু মাস ভেদ ন জানএ
সহজহি অবল মদনে।।
সখি হে সে দেস পিআ গেল মোরা।
রসমতি বানী জতএ ন জানিঅ
সুনিঅ পেম বড় থোলা।।
কহলিও কহনী জতএ ন বুঝএ
কী করতি অঙ্গিত কাজে।
কওন পরি ততএ রতল অছ বালভু
নিভয় নিগুন সমাজে।।
হম অপনাকে ধিক কয় মানল
কি কহব তহ্নিকি বড়াই।
কি হমে গরুবি গমারি সব তহ
কী রতি বিরত কহ্নাই।।

অন্তঃকথন:
মাধব রাধারানীকে পরিত্যাগ করে পরদেশে চলে গেলেন... হা মাধব! নিঠুর মাধব! কেমনে ছেড়ে গেলেন তিনি রাধারানীকে, কেমনেই বা ছেড়ে গেলেন এই মধুর বৃন্দাবন! সেই কথাই বলছেন রাধারানী সখীকে। মাধবকে গঞ্জনা দিতে,রাই সেই পরদেশেরও নিন্দায় মুখর হয়েছেন। রাই বলছেন, যে দেশে কোকিল ডাকে না, মধুকর গুঞ্জন করে না, কাননে ফুল ফোটে না, ছয় ঋতু কি বারোমাসে তফাৎ বোঝা যায় না বলে বসন্ত বিহনে মদন বলহীন, কেউ সেখানে রসের কথা কইতে জানে না, সেখানে প্রেমও বড় অল্প বলে শুনি, সখী মাধব আমার এমন নিরানন্দ রসহীন দেশে গেল! যেখানে স্পষ্ট করে বললেও কেউ প্রেমের কথা বোঝে না, সেখানে মাধবের ইঙ্গিত কি কেউ বুঝবে? সেখানে, সেই নির্গুণ সমাজে বল্লভ আমার কেমন করে মজে আছেন? এমন রসহীন দেশে তিনি যে রইতে পারছেন, তাঁর মহত্বের কথা আর কিই বা বলবো, আমি আপনাকেই ধিক্কার দিই! এতেক বলার পর শ্রীমতীর মনে হচ্ছে, সে দেশে সত্যই কি কানাই প্রেম বিনা রয়েছেন? তাই রাধারানী সখীকে বড় দু:খে বলছেন, সখীরে, আমি কি সবার চেয়ে বুদ্ধিহীনা বলেই এমন ভাবছি? নাকি সত্যই কানাই রতিবিরত!

পদকর্তা:বিদ্যাপতি
রাগ:অজ্ঞাত
তাল:অজ্ঞাত
সংকলন:দেবহূতি সরকার

সন্ধিনী