যমুনা কিনারে

চাঁদ সুধাসম বচন বিলাস

চাঁদ সুধাসম বচন বিলাস।
ভল জন ততহি জাএত বিসবাস।।
মন্দামন্দ বোলএ সবে কোয়।
পিবইত নীম বাঁক মুহ হোয়।।
এ সখি সুমুখি বচন সুন সার।
সে কি হোইতি ভলি জে মুহ খার।।
জে জত জৈসন হৃদয় ধর গোএ।
তকর তৈসন তত গৌরব হোএ।।
গৌরব এ সখি ধৈরজ সাধ।।
পহু নহি ধরএ সতও অপরাধ।।
জৌঁ অছ হৃদয়া মিলত সমাজ।
অবসও রহব আঁউধি ভই লাজ।।
কাচ ঘটী অনুগত জন জেম।
নাগর লখত হৃদয়গত পেম।।
মধুর বচন হে সবহু তহ সার।
বিদ্যাপতি ভন কবিকণ্ঠহার।।

অন্তঃকথন:
রাধারানীর মানের রাগত তিক্ত কথা শুনে দূতী রাধারানীকে পরামর্শ দিয়ে বলছেন, শোনো গো চাঁদের সুধার মত ভালো কথার বিকাশ হয়, ভালো লোকেরা মিষ্ট কথাতেই বিশ্বাস করে। মন্দামন্দ কথা সকল লোকেই বলে, কিন্তু নিম খেলে সবার মুখই বাঁকা হয়, তেঁতো কথার ফলও তেমনই হয়! হে সখি সুন্দরি, সার কথা শোনো, যে মেয়ে শুধুই ঝগড়া করে সে কি কখনো ভালো হয়? যে যত তার হৃদয়ের ভাব গোপন রাখতে পারে তার তত গৌরব হয়! হে প্রিয় সখি, ধৈর্য্য সাধনা করলে গৌরব হয়, প্রভুর শত অপরাধও ধরতে নেই, বুঝেছো? মনে যদি মিলনের সাধ থাকে তাহলে লজ্জা উল্টে রেখো, প্রকাশ কোরো না যেন। অনুগত লোককে যেমন কাঁচা মাটির পাত্রে খাওয়ালেও সে বিরক্ত হয় না, সে তোমার খাওয়ানোর ইচ্ছেটা দেখে, তেমনই সুনাগরের কাছে যতই প্রেম প্রকাশ কর সে তোমার হৃদয়ের প্রেমটাই দেখে গো রাধারানী! কবিকণ্ঠহার বিদ্যাপতি মন্তব্য করছেন, মধুর কথাই জগতে সকলের চেয়ে শ্রেষ্ঠ!

পদকর্তা:বিদ্যাপতি
রাগ:অজ্ঞাত
তাল:অজ্ঞাত
সংকলন:দেবহূতি সরকার

সন্ধিনী