এই মত সব গোপের রমণী
চলিল নাগরী রামা।
রাই পাশে গিয়া চলিল ধাইয়া
সঙ্কেত বনহি ধামা।।
চল চল ধনি রাই প্রেমমণি
চল চল যাব বনে।
রসের আবেশে কহে নবরামা
কহিছে ধনীর স্থানে।।
ইথে ধ্বনি আসি রাধার শ্রবণে
পশিল যতনে তাই।
তরল কথন রমণী অন্তর
কহেন সুন্দরী রাই।।
পুন শুন শুন ডাকে ঘন ঘন
মধুর মুরলী-তান।
শুনিতে চমকে মুরলী ধমকে
চিতে নাহি কিছু আন।।
রাধার আরতি সে নহে পীরিতি
তথাই আছয়ে মন।
বৃন্দাবন যেতে রসের আবেশে
কহিছে সকল জন।।
সুখময়ী রাধা বেশ বনাইল
বন্ধন করিল জাল।
নানা ফুলদাম বেড়ি অনুপাম
দিয়া মুকুতার মাল।।
দুসারি মাণিক তার পাশে পাশে
প্রবাল গাঁথিয়া মাল।
কনক চম্পক কবরী বেড়ল
ভ্রমরা গুঞ্জরে ভাল।।
সিঁথায় সিন্দূর তার মাঝে মাঝে
দিয়েছে চন্দন-ফোঁটা।
যেন শশধর চৌদিকে বেড়ল
কি তার কহিব ঘটা।।
নাসার বেশর অতি মনোহর
হাসিতে মুকুতা খসে।
কনক-কাঁচুলি তার পরিপাটী
মুকুতা গাঁথুনি পাশে।।
ঘাঘর কিঙ্কিনী বাজে রিণি ঝিনি
পিঠেতে দুলিছে ঝাঁপা।
তাহার মাঝারে গাঁথি থরে থরে
সুবাস কনক চাঁপা।।
নীল উড়নি ভুবন-মোহিনী
সোনার নূপুর পায়।
চলিতে চরণে পঞ্চম বাজয়ে
হংস-গমনে যায়।।
চণ্ডীদাস বলে বিনোদিনী রাধা
রূপে করিয়াছে আলো।
দেখিতে নয়ন পিছলিয়া পড়ে
দেখিতে যাইবে চল।।