“আহা মরি মরি পরাণ-পুথলি
বাছনি কালিয়া সোনা।
কত না পেয়েছ ক্ষুধায় পীড়িত
বনে যেতে করি মানা।।
এ দুঃখে না জীব নন্দে কি বলিব
এ শিশু পাঠায়ে বনে।
এ ঘর-করণে আনল ভেজাব
কিবা সে করয়ে ধনে।।
ইহাকে অধিক আর কিবা ধন,
যারে না দেখিলে মরি।
কালি আর গোঠে না পাঠাব মাঠে
কেবা কি করিতে পারি।।”
মধুর বচনে কহে নন্দরাণী
মরমে পাইয়া ব্যথা।
দ্বিগুণ আগুন জ্বলিছে হিয়ায়
শুনিয়া পুত্রের কথা।।
“তোমারে লইয়া আন দেশে যাব
না রব নন্দের ঘরে।
তোমা হেন ধন আর কোথা পাই
বিধাতা দিয়াছে মোরে।।
কত কত বার ছেনা ননী সর
পিয়াই রজনী জাগি।
কটোরা ভরিয়ে রাখিয়ে থাপিয়ে
রাখিয়ে যাহার লাগি।।
এ জন কেমনে এই ধেনু সনে
ফিরিবে বনেতে বনে।
অভাগী মায়ের বিষম অন্তর
ক্ষেণে কত উঠে মনে।।”
মায়ের রোদন বেদন দেখিয়া
কহিছে কানাই তায়।
“পরিবোধ চিতে বেদনী জননি,”
দ্বিজ চণ্ডীদাস গায়।।