যমুনা কিনারে

আজ মোয় জাএব হরি সমাগম

আজ মোয় জাএব হরি সমাগম
কত মনোরথ ভেল।
ঘর গুরুজন নিন্দ নিরূপইত
চন্দ উদয় দেল।।
চন্দা ভলি নহি তুঅ রীতি।
এহি মতি তোহে কলঙ্ক লাগল
কিছূ ন গুনহ ভীতি।।
জগত নাগরি মুখ জিতল জব
গগন গেলা হারি।
তহঁ ওঁ রাহু গরাস পড়লা
দেব তোহ কি গারি।।
এক মাস বিহি তোহি সিরিজএ
দএ সকলও বল।
দোসর দিন পুনু পুর ন রহসী
এহী পাপক ফল।।
ভন বিদ্যাপতি সুন তোয়ঁ জুবতী
ন কর চাঁদক সাতি।
দিনা সোরহ চাঁদক আইতি
তাহি পর ভলি রাতি।।

অন্তঃকথন:
কত আশা নিয়ে অভিসারের উদ্যোগ করেছিলেন শ্রীমতী এমন সময় কিনা চাঁদ এসে চারদিক আলো করে দাঁড়ালো। অভিসার বুঝি মাটি হয় দেখে শ্রীমতী স্বভাবতই চাঁদের ওপরেই কুপিত হয়ে উঠলেন। জগতের সকল অভিসারের প্রতিকূল চন্দ্রের নিন্দায় মুখর হয়ে উঠলেন রাধারানী। রুষ্টা রাধিকা বলছেন, আজ আমি হরিসমাগমে যাবো ভেবে কত মনোরথই না করেছিলাম, কিন্তু ঘরে গুরুজনেরা নিদ্রা গেলেন কিনা ঠিক করে বুঝতে না বুঝতেই চাঁদ উঠে পড়ল! চাঁদ, তোমার রীতি মোটে ভালো নয়! এই জন্যই তো তোমায় কলঙ্ক লাগলো! তবু তুমি এতটুকু ভয় পাও না! জগতের নারীরা যখন মুখশোভায় তোমায় হারিয়ে দিল তখন তুমি আকাশে পালালে, তুমি এমনই দুর্ভাগা যে সেখানেও রাহু তোমায় গ্রাস করল। তোমাকে আর আমি কি গালি দেব! বিধি মাসে একদিন তোমায় সর্ব শক্তি দিয়ে পূর্ণ করে সৃষ্টি করেন, কিন্তু দ্বিতীয় দিনেই তুমি ক্ষয়ে যাও, আর পূর্ণ থাকতে পারো না! এ সবই তোমার পাপের ফল! চাঁদের প্রতি রাধারানীর এই সকল কটুবাক্য শুনে বিদ্যাপতি বলছেন, হে যুবতি শোনো, চাঁদকে এমন করে শাস্তি দিও না। দেখো,মাসের ষোল দিন তো মাত্র চাঁদের আয়ত্তে, তার পরের সমস্ত রাত্রিই তো ভালো, তোমার অভিসারের অনুকূল!

পদকর্তা:বিদ্যাপতি
রাগ:অজ্ঞাত
তাল:অজ্ঞাত
সংকলন:দেবহূতি সরকার

সন্ধিনী