যমুনা কিনারে

আজ পুনিমা তিথি জানি মোয়ে ঐলিহু

আজ পুনিমা তিথি জানি মোয়ে ঐলিহু
উচিত তোহর অভিসার।
দেহজোতি সসিকিরন সমাইতি
কে বিভিনাবএ পার।।
সুন্দরি অপনহু হৃদয় বিচারি।
আঁখি পসারি জগত হম দেখলি
কে জগ তুঅ সম নারি।।
তোহেঁ জনি তিমির হীত কএ মানহ
আনন তোর তিমিরারি।
সহজ বিরোধ দূর পরিহরি ধনি
চল উঠি জতএ মুরারি।।
দূতীক বচন হীত কএ মানল
চালক ভেল পঁচবান।
হরি অভিসার চললি বর কামিনি
বিদ্যাপতি কবি ভান।।

অন্তঃকথন:
চাঁদের আলোয় চরাচর ভেসে যাচ্ছে! এমন জ্যোৎস্নাময়ী রাত্রিতে দূতী এসেছেন শ্রীরাধিকার কাছে মাধবের অভিসারের বার্তা বহন করে। শ্রীমতীর মনে ভয় চাঁদের আলোয় তাঁর অভিসার লোকজানাজানি হয়ে যেতে পারে! দূতী রাধিকাকে অভয় দিয়ে বলছেন, আজ পূর্ণিমা তিথি জেনেই আমি তোমার কাছে এসেছি, এ রজনী তোমার অভিসারের উপযুক্ত সময়! তোমার দেহের জ্যোতি জ্যোৎস্নায় মিশে যাবে, চাঁদের আলোর সঙ্গে লোকে তোমার পার্থক্য করতে পারবে না, তোমার অভিসার গোপন থাকবে, এই তো তোমার অভিসারের মহেন্দ্রক্ষণ! সুন্দরি তুমি তোমার নিজের হৃদয় বিবেচনা করে দেখ। আমি তো আমার দৃষ্টি প্রসারিত করে দেখলাম, তোমার তুল্য রমণী আর তো জগতে কাউকে পেলাম না! তুমি যেন অন্ধকার কে তোমার বন্ধু বলে ভেব না, তোমার শুভ্র আনন তিমিরারি! অর্থাৎ তুমি যদি ভেবে থাকো অমানিশাই কেবল তোমার অভিসারের কাল, তাহলে ভুল ভেবেছ! এই জ্যোৎস্নাই তোমায় লুকিয়ে রেখে মাধবের কাছে পৌঁছে দেবে! ধনি তুমি তোমার মনের স্বভাবত বিরোধকে দূরে রেখে মুরারির কাছে চল! শ্রীমতী দূতীর কথাকে মঙ্গলবাক্য বলে স্বীকার করে নিলেন! শ্রীমতী অভিসারে চললেন, কন্দর্প তাঁর চালক হলেন! বিদ্যাপতি বলছেন, রমনী-শ্রেষ্ঠা হরি অভিসারে যাত্রা করলেন।

পদকর্তা:বিদ্যাপতি
রাগ:অজ্ঞাত
তাল:অজ্ঞাত
সংকলন:দেবহূতি সরকার

সন্ধিনী