যমুনা কিনারে

অলখিতে গোপ আএল চলি গেল

অলখিতে গোপ আএল চলি গেল।
সসরি খসল চির সমরি ন গেল।।
আধ বদন তহ্নি দেখল মোর।
চান অঁএঠ করি চলল চকোর।।
কাহ্নু মোহি দেখলহু গেলাঁহু লজাএ।
তখনুক লাজ অবহু নহি জাএ।।
আধহু অধিক সকোচিত অঙ্গ।
মোলল মৃনাল দোগুন ভেল ভঙ্গ।।
চন্দনে লেপিত তনু রহ সোএ।
বিরহক কসমসি নিন্দ নহি হোয়।।
রসকে তন্ত বুঝএ জদি কেও ।
ভাব ভনএ অভিনব জয়দেও।।

অন্তঃকথন:
শ্যামসুন্দর চুপিচুপি এসে শ্রীমতীকে দেখেই আবার চলে গেছেন। মিলন সম্পূর্ণ হয় নি, শ্রীমতী ভালো করে তাকাতে অবধি পারেন নি। শ্রীমতী তাই আক্ষেপ করে বলছেন, সেই গোপ অলক্ষ্যে এলো আবার চলেও গেল, এমন গোপনে হঠাৎ এলো যে তাড়াতাড়িতে বসন খসে পড়লো সামলাতে অবধি পারলাম না। কানাই আমায় দেখল, আর আমি লজ্জায় মুখ অবনত করে রইলাম, সে আমার অর্ধেক মুখটুকুই দেখতে পেলো। সে এলো, যেন চকোর এসে চন্দ্রকে উচ্ছিষ্ট করে চলে গেলো। আমার সেই তখনকার লজ্জা এখনো যায় নি! তাকে দেখে লজ্জায় আমার অধিকাংশ অঙ্গ সঙ্কুচিত হয়ে এলো, আমি লজ্জায় নুয়ে পড়লাম, ভগ্নমৃণাল যেন দ্বিগুণ ভেঙে পড়ল! সে চলে যাওয়া থেকে বিরহ জ্বালায় অঙ্গ জ্বলে যায়, শীতল চন্দন শরীরে লেপন করে শুয়ে রইলাম, বিরহযন্ত্রণায় আর ঘুম এলো না! অভিনব জয়দেব বিদ্যাপতি বলছেন, রসের তত্ত্ব কেউ যদি বোঝে তবে তাদের জন্যই তিনি এই ভাবের কথা বলছেন!

পদকর্তা:বিদ্যাপতি
রাগ:অজ্ঞাত
তাল:অজ্ঞাত
সংকলন:দেবহূতি সরকার

সন্ধিনী